আজ ভালোবাসার দিন, সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন্স ডে

Spread the love

আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। ‘ভালোবাসি, তোমাকেই ভালোবাসি’। কেননা, আজ ভালোবাসার দিন, সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন্স ডে।
ফাগুনের আগুন রাঙানো সকালের সূর্যের আলোয় আজ মিশে আছে নিভৃত হৃদয়ের বার্তা। আজ আকাশে-বাতাসে ভাসছে অনাদিকালের সেই আকুল আকাঙ্ক্ষা, ‘আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন/খুঁজি তারে আমি আপনায়/আমি শুনি যেন তার চরণের ধ্বনি/আমারি পিয়াসী বাসনায়। ’ কবি নজরুলের এই আবেগমথিত অনুভূতি আজ কোটি কোটি মানুষের অনুভূতি।

‘ভালোবাসা’- মাত্র চারটি অক্ষরে এই শব্দের গভীরতা আর ব্যাপকতা সীমাহীন। ভালোবাসা দিলে মা মরে যায়/যুদ্ধ আসে, ভালোবেসে/মায়ের ছেলেরা চলে যায়’- কী প্রগাঢ় শক্তি আর বিষাদ এই ভালোবাসার। গ্রিক পুরাণের হেক্টর মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও মনুষ্যত্বের প্রতি ভালোবাসার কারণে দাঁড়িয়ে ছিলেন দানবের মুখোমুখি। যুগে যুগে, কালে কালে ভালোবাসার টানে আকুল হয়েছে মানব-মানবী। অনাদিকাল থেকে হৃদয়ের প্রগাঢ় আকাঙ্ক্ষা আর মমতা দিয়ে পরস্পরকে কাছে টেনেছে তারা। আবেগমথিত কণ্ঠে একে অন্যকে বলেছে, ‘জানি শুধু তুমি আছ তাই আছি/তুমি প্রাণময় তাই আমি বাঁচি/যতো পাই তোমায় আরও ততো যাচি/যতো জানি ততো জানি নে। ’আজ ভালোবাসা দিবসে প্রেমিকযুগলের পদচারণায় মুখর থাকবে শহরের নানা পথ-প্রান্তর। দুজনে দুজনার হাত ধরে ঘুরবে একপ্রান্ত থেকে আরেকপ্রান্ত। কারণ, আজ নিজেদের মতো করে হারিয়ে যাওয়ার দিন। একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া, ছবি-সেলফি তোলা চলবে। অনেক যুগল রিকশায় ঘুরে বেড়াবেন। অনেকে আবার বিভিন্ন উদ্যানে-পার্কে গাছের ছায়ায় বসে মন খুলে কথা বলবেন।
ভালোবাসা দিবস উদযাপনের ইতিহাস বেশ পুরনো এবং এ নিয়ে একাধিক কাহিনী প্রচলিত রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত গল্পটি হচ্ছে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে নিয়ে। সময়টা ২৬৯ খ্রিস্টাব্দ। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামে একজন রোমান ক্যাথলিক ধর্মযাজক, যিনি একজন চিকিৎসকও ছিলেন। সেই সময় রোমান সম্রাট ছিলেন দ্বিতীয় ক্লডিয়াস। রোমানরা একের পর এক রাষ্ট্র জয় করে চলেছে।

যুদ্ধের জন্য রাষ্ট্রের বিশাল সৈন্যবাহিনী গড়ে তোলা দরকার। কিন্তু রাজ্যের লোকজন বিশেষ করে তরুণরা এতে উৎসাহী নয়। সম্রাট ধারণা করলেন, পুরুষরা বিয়ে করতে না পারলে যুদ্ধে যেতে রাজি হবে। তিনি তরুণদের জন্য বিয়ে নিষিদ্ধ করলেন। কিন্তু প্রেমিক তারুণ্য মন এমন নিয়ম মানতে চায় না। তাদের পাশে এগিয়ে এলেন সেন্ট ভ্যালেন্টাইন। ভ্যালেন্টাইন প্রেমাসক্ত তরুণ-তরুণীদের বিয়ের ব্যবস্থা করলেন।

কিন্তু একসময় ধরা পড়ে গেলেন ভ্যালেন্টাইন। তাকে জেলে নেওয়া হলো। দেশজুড়ে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই ভ্যালেন্টাইনকে জেলখানায় দেখতে যান। জেলারের একজন অন্ধ মেয়েও ভ্যালেন্টাইনকে দেখতে যেত। চিকিৎসক ভ্যালেন্টাইন মেয়েটির অন্ধত্ব দূর করলেন। একসময় হৃদয়ের বন্ধনে বাঁধা পড়লেন তারা। ধর্মযাজক হয়েও নিয়ম ভেঙে প্রেম করা এবং বিয়ে করেন ভ্যালেন্টাইন। খবর যায় সম্রাটের কানে।

তিনি ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই তারিখটি ছিল ২৬৯ খ্রিস্টাব্দের আজকের দিন ‘১৪ ফেব্রুয়ারি’। ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার আগে ভ্যালেন্টাইন তার প্রেয়সী এবং বধূকে যে চিঠিটি লেখেন তার শেষটায় লেখা ছিল ‘লাভ ফ্রম ইওর ভ্যালেন্টাইন’।এরপর দুই শতাব্দী নীরবে-নিভৃতে ভালোবাসা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে ১৪ ফেব্রুয়ারি। ৪৯৬ খ্রিস্টাব্দে রোমের রাজা পপ জেলুসিয়াস এই দিনটিকে ভ্যালেন্টাইন দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন।
ঢাকা,শুক্রবার ১৪ ফেব্রুয়ারি এইচ বি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

Facebook Comments Box

সর্বশেষ সংবাদ



» ৭ দিনের রিমান্ডে চট্টগ্রামের সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ

» যে আইনেই হোক ধর্ষকের বিচার জনসম্মুখে কার্যকর করতে হবে-আফরোজা আব্বাস

» আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ আসামির যাবজ্জীবন বহাল

» নৈতিক শিক্ষার অভাবের কারণেই ধর্ষণ-নির্যাতন বাড়ছে: জামায়াত আমির

» কলাপাড়ায় ইভটিজারকে জুতা পেটা শেষে মাথা ন্যাড়া করে দিলেন বিক্ষুব্ধ জনতা

» ধর্ষকদের বিরুদ্ধে কলাপাড়ায় ছাত্র জনতার লাঠি মিছিল

» হাইকোর্টে আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় রোববার

» পাকিস্তান থেকে আরও ২৬ হাজার টন আতপ চাল নিয়ে বন্দরে এল পাকিস্তানি জাহাজ এমভি মারিয়াম

» বাংলাদেশের সংকটময় পরিস্থিতিতে পাশে থাকবে জাতিসংঘ- মহাসচিব

» কলাপাড়ায় উদযাপিত হয়েছে হলি উৎসব

(সম্পাদক)
কাজী আবু তাহের মোহাম্মদ নাছির
নির্বাহী সম্পাদক,
আফতাব খন্দকার (রনি)

বার্তা সম্পাদক-খন্দকার সোহাগ হাছান
সহ বার্তা সম্পাদক-কামাল হোসেন খান
সহ বার্তা সম্পাদক-কাজী আতিকুর রহমান আতিক

আজ : রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, খ্রিষ্টাব্দ, ২রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ ভালোবাসার দিন, সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন্স ডে

Spread the love

আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। ‘ভালোবাসি, তোমাকেই ভালোবাসি’। কেননা, আজ ভালোবাসার দিন, সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন্স ডে।
ফাগুনের আগুন রাঙানো সকালের সূর্যের আলোয় আজ মিশে আছে নিভৃত হৃদয়ের বার্তা। আজ আকাশে-বাতাসে ভাসছে অনাদিকালের সেই আকুল আকাঙ্ক্ষা, ‘আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন/খুঁজি তারে আমি আপনায়/আমি শুনি যেন তার চরণের ধ্বনি/আমারি পিয়াসী বাসনায়। ’ কবি নজরুলের এই আবেগমথিত অনুভূতি আজ কোটি কোটি মানুষের অনুভূতি।

‘ভালোবাসা’- মাত্র চারটি অক্ষরে এই শব্দের গভীরতা আর ব্যাপকতা সীমাহীন। ভালোবাসা দিলে মা মরে যায়/যুদ্ধ আসে, ভালোবেসে/মায়ের ছেলেরা চলে যায়’- কী প্রগাঢ় শক্তি আর বিষাদ এই ভালোবাসার। গ্রিক পুরাণের হেক্টর মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও মনুষ্যত্বের প্রতি ভালোবাসার কারণে দাঁড়িয়ে ছিলেন দানবের মুখোমুখি। যুগে যুগে, কালে কালে ভালোবাসার টানে আকুল হয়েছে মানব-মানবী। অনাদিকাল থেকে হৃদয়ের প্রগাঢ় আকাঙ্ক্ষা আর মমতা দিয়ে পরস্পরকে কাছে টেনেছে তারা। আবেগমথিত কণ্ঠে একে অন্যকে বলেছে, ‘জানি শুধু তুমি আছ তাই আছি/তুমি প্রাণময় তাই আমি বাঁচি/যতো পাই তোমায় আরও ততো যাচি/যতো জানি ততো জানি নে। ’আজ ভালোবাসা দিবসে প্রেমিকযুগলের পদচারণায় মুখর থাকবে শহরের নানা পথ-প্রান্তর। দুজনে দুজনার হাত ধরে ঘুরবে একপ্রান্ত থেকে আরেকপ্রান্ত। কারণ, আজ নিজেদের মতো করে হারিয়ে যাওয়ার দিন। একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া, ছবি-সেলফি তোলা চলবে। অনেক যুগল রিকশায় ঘুরে বেড়াবেন। অনেকে আবার বিভিন্ন উদ্যানে-পার্কে গাছের ছায়ায় বসে মন খুলে কথা বলবেন।
ভালোবাসা দিবস উদযাপনের ইতিহাস বেশ পুরনো এবং এ নিয়ে একাধিক কাহিনী প্রচলিত রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত গল্পটি হচ্ছে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে নিয়ে। সময়টা ২৬৯ খ্রিস্টাব্দ। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামে একজন রোমান ক্যাথলিক ধর্মযাজক, যিনি একজন চিকিৎসকও ছিলেন। সেই সময় রোমান সম্রাট ছিলেন দ্বিতীয় ক্লডিয়াস। রোমানরা একের পর এক রাষ্ট্র জয় করে চলেছে।

যুদ্ধের জন্য রাষ্ট্রের বিশাল সৈন্যবাহিনী গড়ে তোলা দরকার। কিন্তু রাজ্যের লোকজন বিশেষ করে তরুণরা এতে উৎসাহী নয়। সম্রাট ধারণা করলেন, পুরুষরা বিয়ে করতে না পারলে যুদ্ধে যেতে রাজি হবে। তিনি তরুণদের জন্য বিয়ে নিষিদ্ধ করলেন। কিন্তু প্রেমিক তারুণ্য মন এমন নিয়ম মানতে চায় না। তাদের পাশে এগিয়ে এলেন সেন্ট ভ্যালেন্টাইন। ভ্যালেন্টাইন প্রেমাসক্ত তরুণ-তরুণীদের বিয়ের ব্যবস্থা করলেন।

কিন্তু একসময় ধরা পড়ে গেলেন ভ্যালেন্টাইন। তাকে জেলে নেওয়া হলো। দেশজুড়ে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই ভ্যালেন্টাইনকে জেলখানায় দেখতে যান। জেলারের একজন অন্ধ মেয়েও ভ্যালেন্টাইনকে দেখতে যেত। চিকিৎসক ভ্যালেন্টাইন মেয়েটির অন্ধত্ব দূর করলেন। একসময় হৃদয়ের বন্ধনে বাঁধা পড়লেন তারা। ধর্মযাজক হয়েও নিয়ম ভেঙে প্রেম করা এবং বিয়ে করেন ভ্যালেন্টাইন। খবর যায় সম্রাটের কানে।

তিনি ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই তারিখটি ছিল ২৬৯ খ্রিস্টাব্দের আজকের দিন ‘১৪ ফেব্রুয়ারি’। ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার আগে ভ্যালেন্টাইন তার প্রেয়সী এবং বধূকে যে চিঠিটি লেখেন তার শেষটায় লেখা ছিল ‘লাভ ফ্রম ইওর ভ্যালেন্টাইন’।এরপর দুই শতাব্দী নীরবে-নিভৃতে ভালোবাসা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে ১৪ ফেব্রুয়ারি। ৪৯৬ খ্রিস্টাব্দে রোমের রাজা পপ জেলুসিয়াস এই দিনটিকে ভ্যালেন্টাইন দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন।
ঢাকা,শুক্রবার ১৪ ফেব্রুয়ারি এইচ বি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ সংবাদ



সর্বাধিক পঠিত



About Us | Privacy Policy | Terms & Conditions | Contact Us

(সম্পাদক)
কাজী আবু তাহের মোহাম্মদ নাছির
নির্বাহী সম্পাদক,
আফতাব খন্দকার (রনি)

বার্তা সম্পাদক-খন্দকার সোহাগ হাছান
সহ বার্তা সম্পাদক-কামাল হোসেন খান
সহ বার্তা সম্পাদক-কাজী আতিকুর রহমান আতিক

প্রধান কার্যালয়: গ-১০৩/২ মধ্যবাড্ডা প্রগতি স্বরণী বাড্ডা ঢাকা-১২১২|

Phone: +8801714043198, Email: hbnews24@gmail.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি । সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © HBnews24.com

Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.

Powered By
Best Wordpress Adblock Detecting Plugin | CHP Adblock