জমজমাট গোলের গুড়ের বাজার

Spread the love

পিঠা-পায়েসে অন্য গুড়ের চেয়ে গোলের গুড়ের আলাদা স্বাদ। তাই দিনদিন গোলের গুড়ের চাহিদা বাড়ছে। ক্রেতারাও চাহিদা মতো গোলের গুড় কিনতে বাজারে ভিড় করেছেন। মোটকথা পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গোলের গুড়ের বাজার এখন জমজমাট। তবে ক্রেতাদের চাপে ব্যস্ত সময় কাটাতে হচ্ছে ব্যবসায়ীসহ গুড় তৈরির কারিগরদের। গোল গাছের সংগৃহীত রস থেকে বছরে এ উপজেলায় প্রায় ৩ কোটি টাকার গুড় বিক্রি হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে থেকে জানা গেছে। কিন্তু গুড় প্রস্তুতকারকরা বলছেন, সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকার কারণে তারা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তবে অতি মিষ্টি এ গুড়ের পরিচিতি এক সময় এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে এটি বেশ বাণিজ্যিক প্রসারতা লাভ করেছে।
স্থানীয়রা জানান, পতিত জমিতে বেড়ে ওঠা গোল গাছ থেকে শীত মৌসুমের শুরুর দিকে গোলের রস সংগ্রহ করা হয়। প্রতিদিনই সূর্য ওঠার সাথে সাথে কলশ নিয়ে বগানে গোল গাছে রস সংগ্রহ করতে বেড়িয়ে পরে চাষিরা। এরপর সেই রস টিনের তাপালে আগুনে ফুটিয়ে তৈরি করে গুড়। এ উপজেলার নীলগঞ্জ, মিঠাগঞ্জ, চাকামইয়া ইউনিয়নের ৩০০ পরিবার এ গুড় উৎপাদনে সাথে জড়িত রয়েছে। তাদের জীবিকার একটি অংশ গোলের গুড় থেকে আসে। এখানকার গোলের গুড় খুবই সুস্বাদু এবং চাহিদা সম্পন্ন। স্থানীয়রা এ গোলের গুড় তৈরি করে মৌসুমভিত্তিক বাড়তি উপার্জনের সুযোগ পান। বিশেষ করে এখন খেজুর গাছসহ তাল ও গোলের গাছের সংখ্যা কমে গেছে। তাই গুড় উৎপাদন কম হচ্ছে এমনটাই জানিয়েছেন গোল চাষিরা।
নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামের সুনিতি বলেন, বিয়ের পর থেকেই বছরের এ সময়ে রস ফুটিয়ে গুড় তৈরি করি। আগে অনেক বেশি গুড় হতো। এখন কমে গেছে। একই গোল চাষি নিঠুর হাওলাদার বলেন, এখন বাজারে গিয়ে গুড় বিক্রি করতে হয় না। একশ্রেণির খুচরা বিক্রেতা বাড়ি এসেই গুড় নিয়ে যান। প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
অপর এক চাষি পরিমল হাওলাদার জানান, তার প্রায় ৩০০ গোল গাছ থেকে প্রতিদিন ৮-১০ কলস রস সংগ্রহ করেন। সেখান থেকে দৈনিক ২৫ থেকে ৩০ কেজি গুড় তৈরি করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন।
গুড় ক্রেতা আনসার উদ্দিন বলেন, অন্য গুড়ের চেয়ে গোলের গুড় আলাদা স্বাদযুক্ত, সাশ্রয়ী হওয়ায় এবং দীর্ঘদিন সংরক্ষনে রাখা যায় বলে গোলের গুড়ের ব্যাপক চাহিদা। গুড়ের বাজারে গুড় ক্রয় করতে আসা মরিয়ম বেগম বলেন, গোলের গুড়ের পিঠা বা পায়েস অতি সুস্বাদু। তিনিও ৩ কেজি গুড় কিনেছেন বলে জানান। কলাপাড়া ব্যবসায়ী সমিতির অর্থ সম্পাদক মো.নুরুজ্জামান খালাশি বলেন, গোলের গুড়ের চাহিদা বেশি। তাই বাজারে ক্রেতাদেরও ভীড় থাকে।
বন বিভাগের মহিপুর ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম জানান, পরীক্ষামূলকভাবে বেশ কয়েকটি স্থানে গোলগাছের বীজ রোপণ করা হয়েছে। এতে ব্যাপক সফলতা পেয়েছি।
উত্তম কুমার হাওলাদার,কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি
পটুয়াখালী,মঙ্গলবার ১২ মার্চ এইচ বি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

 

Facebook Comments Box

সর্বশেষ সংবাদ



» ব্যাংক থেকে নগদ টাকা উত্তোলনের সীমা তুলে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক

» বিতর্ক সৃষ্টি হয় এরূপ কোন কর্মে হাত দেওয়া হবে না-ধর্ম উপদেষ্টা

» চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের শিপ ইয়ার্ডে জাহাজ কাটার সময় বিস্ফোরণ ও আগুনে ৬ জন দগ্ধ

» চলমান পোলিও টিকা কর্মসূচির মধ্যে গাজা ভূখণ্ডে বিমান হামলা অন্তত ২৭ জন নিহত

» গণভবন পরিদর্শন করেছেন তিনজন উপদেষ্টা

» জামালপুরে আদা চাষে গ্রামীন মহিলারা স্বাবলম্বি

» ধীরে ধীরে কমছে বন্যার পানি তবে এখনও দুর্ভোগ কমেনি দুর্গতদের

» সাবেক নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

» সাবেক ভূমিমন্ত্রীর ছেলে শিরহান শরিফ তমালকে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব

» ভারতের সিকিমে সড়ক দুর্ঘটনায় চার সেনা সদস্য নিহত

(সম্পাদক)
কাজী আবু তাহের মোহাম্মদ নাছির
নির্বাহী সম্পাদক,
আফতাব খন্দকার (রনি)

বার্তা সম্পাদক-খন্দকার সোহাগ হাছান
সহ বার্তা সম্পাদক-কামাল হোসেন খান
সহ বার্তা সম্পাদক-কাজী আতিকুর রহমান আতিক

আজ : রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, খ্রিষ্টাব্দ, ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জমজমাট গোলের গুড়ের বাজার

Spread the love

পিঠা-পায়েসে অন্য গুড়ের চেয়ে গোলের গুড়ের আলাদা স্বাদ। তাই দিনদিন গোলের গুড়ের চাহিদা বাড়ছে। ক্রেতারাও চাহিদা মতো গোলের গুড় কিনতে বাজারে ভিড় করেছেন। মোটকথা পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গোলের গুড়ের বাজার এখন জমজমাট। তবে ক্রেতাদের চাপে ব্যস্ত সময় কাটাতে হচ্ছে ব্যবসায়ীসহ গুড় তৈরির কারিগরদের। গোল গাছের সংগৃহীত রস থেকে বছরে এ উপজেলায় প্রায় ৩ কোটি টাকার গুড় বিক্রি হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে থেকে জানা গেছে। কিন্তু গুড় প্রস্তুতকারকরা বলছেন, সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকার কারণে তারা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তবে অতি মিষ্টি এ গুড়ের পরিচিতি এক সময় এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে এটি বেশ বাণিজ্যিক প্রসারতা লাভ করেছে।
স্থানীয়রা জানান, পতিত জমিতে বেড়ে ওঠা গোল গাছ থেকে শীত মৌসুমের শুরুর দিকে গোলের রস সংগ্রহ করা হয়। প্রতিদিনই সূর্য ওঠার সাথে সাথে কলশ নিয়ে বগানে গোল গাছে রস সংগ্রহ করতে বেড়িয়ে পরে চাষিরা। এরপর সেই রস টিনের তাপালে আগুনে ফুটিয়ে তৈরি করে গুড়। এ উপজেলার নীলগঞ্জ, মিঠাগঞ্জ, চাকামইয়া ইউনিয়নের ৩০০ পরিবার এ গুড় উৎপাদনে সাথে জড়িত রয়েছে। তাদের জীবিকার একটি অংশ গোলের গুড় থেকে আসে। এখানকার গোলের গুড় খুবই সুস্বাদু এবং চাহিদা সম্পন্ন। স্থানীয়রা এ গোলের গুড় তৈরি করে মৌসুমভিত্তিক বাড়তি উপার্জনের সুযোগ পান। বিশেষ করে এখন খেজুর গাছসহ তাল ও গোলের গাছের সংখ্যা কমে গেছে। তাই গুড় উৎপাদন কম হচ্ছে এমনটাই জানিয়েছেন গোল চাষিরা।
নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামের সুনিতি বলেন, বিয়ের পর থেকেই বছরের এ সময়ে রস ফুটিয়ে গুড় তৈরি করি। আগে অনেক বেশি গুড় হতো। এখন কমে গেছে। একই গোল চাষি নিঠুর হাওলাদার বলেন, এখন বাজারে গিয়ে গুড় বিক্রি করতে হয় না। একশ্রেণির খুচরা বিক্রেতা বাড়ি এসেই গুড় নিয়ে যান। প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
অপর এক চাষি পরিমল হাওলাদার জানান, তার প্রায় ৩০০ গোল গাছ থেকে প্রতিদিন ৮-১০ কলস রস সংগ্রহ করেন। সেখান থেকে দৈনিক ২৫ থেকে ৩০ কেজি গুড় তৈরি করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন।
গুড় ক্রেতা আনসার উদ্দিন বলেন, অন্য গুড়ের চেয়ে গোলের গুড় আলাদা স্বাদযুক্ত, সাশ্রয়ী হওয়ায় এবং দীর্ঘদিন সংরক্ষনে রাখা যায় বলে গোলের গুড়ের ব্যাপক চাহিদা। গুড়ের বাজারে গুড় ক্রয় করতে আসা মরিয়ম বেগম বলেন, গোলের গুড়ের পিঠা বা পায়েস অতি সুস্বাদু। তিনিও ৩ কেজি গুড় কিনেছেন বলে জানান। কলাপাড়া ব্যবসায়ী সমিতির অর্থ সম্পাদক মো.নুরুজ্জামান খালাশি বলেন, গোলের গুড়ের চাহিদা বেশি। তাই বাজারে ক্রেতাদেরও ভীড় থাকে।
বন বিভাগের মহিপুর ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম জানান, পরীক্ষামূলকভাবে বেশ কয়েকটি স্থানে গোলগাছের বীজ রোপণ করা হয়েছে। এতে ব্যাপক সফলতা পেয়েছি।
উত্তম কুমার হাওলাদার,কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি
পটুয়াখালী,মঙ্গলবার ১২ মার্চ এইচ বি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ সংবাদ



সর্বাধিক পঠিত



About Us | Privacy Policy | Terms & Conditions | Contact Us

(সম্পাদক)
কাজী আবু তাহের মোহাম্মদ নাছির
নির্বাহী সম্পাদক,
আফতাব খন্দকার (রনি)

বার্তা সম্পাদক-খন্দকার সোহাগ হাছান
সহ বার্তা সম্পাদক-কামাল হোসেন খান
সহ বার্তা সম্পাদক-কাজী আতিকুর রহমান আতিক

প্রধান কার্যালয়: গ-১০৩/২ মধ্যবাড্ডা প্রগতি স্বরণী বাড্ডা ঢাকা-১২১২|

Phone: +8801714043198, Email: hbnews24@gmail.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি । সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © HBnews24.com