তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মোঃ নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং আন্দোলনকে বেগবান করেছেন।
আজ সাভারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে ‘গণঅভ্যুত্থানের সরকার: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপট প্রসঙ্গে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, গত ১৬ বছরে লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মানুষের মাঝে যে প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছে তার চূড়ান্ত রূপ হলো ৩৬ দিনের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন। তিনি আরো বলেন, অভ্যুত্থান-পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে যেন ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা গড়ে না উঠে, সেজন্য সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। জনগণের মনের ভাষাকে রাজনীতির ভাষায় রূপান্তরের লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, অনেকে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে তুলনা করেন। এ ধারণা একেবারেই ভুল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাজ হলো নির্বাচন আয়োজন করে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। আর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আসা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য হলো রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার করে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পথ মসৃণ করা।
আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী লীগ যে মতাদর্শ ও প্রক্রিয়ায় রাজনীতি করেছে, সেই আওয়ামী লীগ আর বাংলাদেশে কখনো আসবে না। যদি আসে, সেটা হবে শহিদদের সঙ্গে প্রতারণা। পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সংবিধান পরিবর্তন করে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে নেয়। এরপর তারা একের পর এক নির্বাচনকে আয়ত্তে নিয়ে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে।
বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মধ্য দিয়ে গিয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এমন একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে, যেখানে মানবাধিকার ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। রাজনীতির ইতিবাচক পরিবর্তনের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, আমাদের এমন একটি রাজনৈতিক কাঠামো সৃষ্টি করতে হবে যেখানে কেউ যেন আরেকজন শেখ হাসিনা হয়ে উঠতে না পারে।
জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি মুশফিক উস সালেহীনের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস-সচিব আখতার হোসেন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য-সচিব আরিফ সোহেল।
আলোচনার শুরুতে বক্তব্য প্রদান করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রব।
অনুষ্ঠান শেষে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদদের স্মরণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অদম্য ২৪’ স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন।
ঢাকা,বুধবার ২৩ অক্টোবর এইচ বি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।