বৃটিশ বিরোধী সন্যাসী আন্দোলনের ফকির মজনুশাহের আস্তানা ছিলো জামালপুরের দয়াময়ী মন্দির। এই মন্দিরটি ইতিহাসের কালের সাক্ষী। ইতিহাসবিদের মতে, সে সময় হিন্দু সন্যাসী ও মুসলিম সন্যাসীদের পদচারনায় ভরপুর থাকতো। সেই থেকে জমালপুরের আদি নাম ছিলো সন্যাসী নগর। ফকির মজনু শাহ ছিলো সন্যাসীদের নেতা।
জানা যায়, আজ থেকে তিনশ বছর আগে বাংলা ১১০৪ সনে বাংলার নবাব মুর্শিদ কুলী খানের বিশ্বস্থ সহচর ময়মনসিংহের জাফরশাহী পরগনার জায়গরিদার শ্রী কৃষ্ণরায় চৌধুরী দয়াময়ী মহদেব্য মাতার নামে দয়াময়ী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে দয়াময়ী মন্দির খুবই প্রসিদ্ধ। ইতিহাস বিদদের মতে শ্রী কৃষ্ণ রায় চৌধুরীর পুত্র বগুরা থেকে ময়মনসিংহের রাম গোপালপুরে এসে জমিদারি গ্রহণ কালে এ মন্দিরটি রাম গোপালপুরের জমিদার কর্তৃক পরিচালিত হতে থাকে। শ্রীকৃষ্ণ রায় চৌধুরীরর পুত্র বধু নারয়নী দেবী চৌধুরানী তৎকালীন বাংলার গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিংয়ের কাছ থেকে ৫হাজার একর জমি দেবওর এস্টেটের দান করেন।
দয়ময়ী মন্দিরের ভেতরে শিব মন্দির রয়েছে। শিব মন্দিরটি ঘিরে বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের সুত্রপাত ঘটে। হিন্দু ও মুসলিম সন্যাসীরা দিনের বেলায় ধর্মীয় উপাষনায় ব্যস্ত থাকতেন আর রাতের বেলায় চলতো দেশীয় অস্ত্রের মহড়া। ফকির মজনুশাহ প্রায়ই যাতায়াত করতেন এবং উত্তাল ব্রহ্মপুত্র নদের বজরা নৌকা করে সন্যাসীদের নিয়ে আসতেন।
ঐ সব সন্যাসীরা বৃটিশদের তাড়ানোর স্বপ্ন দেখতেন। ইতিহাসবিদদের মতে মন্দিরটি ছিলো সন্যাসীদের ক্যাম্প। ফকির মজনুশাহের নেতৃত্বে বৃটিশদের সাথে সন্যাসীদের তুমুল যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে ফকির মজনুশাহ সহ অসংখ্য সন্যাসী শহীদ হন। ফকির মজনুশাহের মৃত্যুর পর সন্যাসী বিদ্রহ থেকে গেলেও সন্যাসীরা বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েন। যা ইতিহাসে সন্যাসী বিদ্রহ নামে খ্যাত।
কাজী রফিকুল হাসান, মালগুদাম রোড, মুকন্দবাড়ী, জামালপুর প্রতিনিধি।
জামালপুর,রোববার ০৯ জুন এইচ বি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।