‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণকে প্রাধান্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার-২০২৪ ঘোষণা করলেন দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার পর রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহার ঘোষণা শুরু করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের দ্বাদশ নির্বাচনী ইশতেহার পুস্তিকা আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। বক্তব্যে সংক্ষিপ্ত আকারে ইশতেহার তুলে ধরেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
ইশতেহার ঘোষণার বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, আসুন, আরও একবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের জয়যুক্ত করে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিন। আপনারা আমাদের ভোট দিন, আমরা আপনাদের উন্নয়ন, শান্তি ও সমৃদ্ধি দেব।
বিগত বছরগুলোতে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত ১৫ বছরের সরকার পরিচালনার পথ-পরিক্রমায় যা কিছু ভুল-ত্রুটি, তার দায়ভার আমাদের। সাফল্যের কৃতিত্ব আপনাদের। আমাদের ভুল-ত্রুটিগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আমরা কথা দিচ্ছি, অতীতের ভুল-ভ্রান্তি থেকে শিক্ষা নিয়ে আপনাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করব।
তিনি বলেন, বাবা-মা, ভাই, আত্মীয়-স্বজন সবাইকে হারিয়ে আমি রাজনীতিতে এসেছি শুধু আমার বাবা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত কাজ শেষ করে এদেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে। এ কাজ করতে গিয়ে আমাকে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়েছে বারবার। কিন্তু বাবার কথা ভেবে, আপনাদের কথা ভেবে আমি পিছপা হইনি।
শেখ হাসিনা বলেন, যতদিন আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখেন, সুস্থ রাখেন, ততদিন যা কর্তব্য হিসেবে আমি গ্রহণ করেছি, সেখান থেকে সরে আসব না। আপনাদের সেবক হিসেবে কাজ করার মধ্য দিয়েই আমি আমার বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই।শেখ হাসিনা বলেন, মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার আদায়, মাতৃভূমির স্বাধীনতা থেকে শুরু করে এ দেশের যা কিছু মহৎ অর্জন, তা এসেছে আওয়ামী লীগের হাত ধরে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক-বাহক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাত ধরেই ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠিত হবে।
এবারের ইশতেহারে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে ১১টি বিষয়। এর মধ্যে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন, দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা, কর্মোপযোগী শিক্ষা ও যুবকদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, সমন্বিত কৃষি ব্যবস্থা, যান্ত্রিকীকরণ ও প্রক্রিয়াযাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করা হবে। দৃশ্যমান অবকাঠামো বৃদ্ধি করে শিল্পের প্রসার ঘটানোর দিকে মনোযোগ দেবে সরকার। ব্যাংকসহ আর্থিক খাতে দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে।
এছাড়াও নিম্ন আয়ের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা সুলভ, সর্বজনীন পেনশন, সর্বস্তরে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুরক্ষা বৃদ্ধি করা হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকারিতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে ইশতেহারে। গুরুত্ব পাবে সাম্প্রদায়িকতা, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ রোধ।
আওয়ামী লীগের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে গুরুত্ব পেয়েছে কৃষি, অর্থনৈতিক ও শিল্প উৎপাদন খাত, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের বিষয়টি। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে, প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্যমাত্রা ইশতেহারে স্থান পেয়েছে। ২০১৮ সালে দলটির ইশতেহারে স্লোগান ছিলো, ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’।ইশতেহার ঘোষণায় দেয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি রোধে চ্যালেঞ্জগুলোও উল্লেখ করেন। সেই সাথে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক তথা সার্বিক উন্নয়নে আওয়ামী লীগের ভূমিকাগুলোও তুলে ধরেন তিনি।
ঢাকা,বুধবার ২৭ ডিসেম্বর এইচ বি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।