১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কময় দিন।
স্বাধীন বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও নতুন রাষ্ট্রকে মেধাশূন্য করার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় দেশের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও শিল্পীসহ বহু গুণীজনকে ধরে নিয়ে পৈশাচিকভাবে হত্যাযজ্ঞ চালায়। বাঙালির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের তালিকা করে এ হত্যাকাণ্ড চালানো হয়।
২৫ মার্চ কালরাত থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময়জুড়েই বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়। তবে বিজয়ের প্রাক্কালে ১৪ ডিসেম্বর এ হত্যাযজ্ঞ ভয়াবহ রূপ নেয়।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানের এ দেশীয় দোসর আল-বদরের সাহায্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, সংস্কৃতি কর্মীসহ বিভিন্ন পেশার বরেণ্য ব্যক্তিদের অপহরণ করা হয়। পরে নিদারুণ যন্ত্রণা দিয়ে রায়েরবাজার ও মিরপুরে তাদের হত্যা করা হয়। এ দু’টি স্থান এখন বধ্যভূমি হিসেবে সংরক্ষিত।
মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে আল-বদর বাহিনী আরও অনেক বুদ্ধিজীবীকে ধরে নিয়ে মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে স্থাপিত আল-বদর ঘাঁটিতে নির্যাতনের পর রায়েরবাজার বধ্যভূমি ও মিরপুর কবরস্থানে নিয়ে হত্যা করে।যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের লক্ষ্যে জাতীয় কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ দিন সকালে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল নেমেছে। কুয়াশা ভোরের আলো যত বাড়ছে, মানুষের চাপও তত বাড়ছে।বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে সকাল থেকেই রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা লোকজন রায়েরবাজারে আসতে শুরু করেন। তারা সারিবদ্ধভাবে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করছেন।
এদিকে, রাজধানী ও আশপাশের সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসা বেশিরভাগ মানুষই শোকের প্রতীক কালো পোশাক পরে এসেছেন। হাতে রয়েছে ফুলের তোড়াসহ ছোট ছোট প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন।
ঢাকা,বৃহস্পতিবার ১৪ ডিসেম্বর এইচ বি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।